সিটি ব্যাংকে বেতন কমছে ১৬ শতাংশ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

সিটি ব্যাংকে বেতন কমছে ১৬ শতাংশ

হারুন-অর-রশিদ : নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে সাধারণ ছুটিতেও সীমিত আকারে খেলা ছিল ব্যাংকগুলো। এ সময় সতর্কভাবে কাজ করেও প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ব্যাংকাররা। ব্যাংক খাতে করোনায় প্রথম মারা যান সিটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা। এ নিয়ে বেসরকারি ব্যাংকটিতে দুই জনসহ এই পর্যন্ত দেশে ১৫ ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন তিন শতাধিক। তবুও ঝুঁকি নিয়েই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যাংকাররা। কিন্তু এর মধ্যেই সিটি ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ১৬ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন ৫৫ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ডেকে ১৬ শতাংশ বেতন কমানোর ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ বেতন ও ৬ শতাংশ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কমানো হবে, যা কার্যকর হবে চলতি বছরের ১ জুন থেকে। এই সিদ্ধান্তের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া তিনি আরও ঘোষণা দেন যে, ২০২১ সালে সিটি ব্যাংক পারফরম্যান্স বোনাস ও ইনক্রিমেন্ট দেবে না।

এ দিকে বেতন কমানোর কারণে ব্যাংকের সাড়ে চার হাজার কর্মীর অধিকাংশই পরিচালনা পর্ষদ ও শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি, ব্যাংক এখনো বেতন কমানোর মতো সংকটে পড়েনি। এখনো মুনাফার ধারায় রয়েছে। লোকসান হওয়ার আগে বেতন কমানো অযৌক্তিক।

এ বিষয়ে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘করোনার কারণে ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ আদায় কমে গেছে। অন্যদিকে ৯ শতাংশ সুদ বাস্তবায়ন করায় আয় কমেছে। এই মুহূর্তে দুটি উপায় ছিল, হয় ছাঁটাই না হয় বেতন কমানো। আমরা কর্মীদের ছাঁটাই না করে বেতন কমিয়েছি। একজন কর্মী আগে যেখানে ১ লাখ টাকা পেত সে এখন ৮৫ হাজার টাকা পাবে। এতে তার সংসার ভালোভাবে চলবে। আর যদি চাকরি চলে যায় তা হলে তিনি পরিবার নিয়ে বিপদে পড়বেন। আমরা মুনাফার জন্য নয়, টিকে থাকার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আবার আগের সুবিধায় ফিরে যাব।’

দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেডের যাত্রা শুরু ১৯৮৩ সালে। বাংলাদেশ-আমেরিকান এক্সপ্রেস ক্রেডিট চালুর মাধ্যমে ব্যাংকটি কার্ড ব্যবসায়ে শীর্ষ স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে এটি দেশের অন্যতম ব্যাংক। জানা গেছে, ব্যাংকটির কর্মীদের বেতন-ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ব্যয় হয় প্রায় ৩৯ কোটি টাকা। এখন ১৬ শতাংশ বেতন কমানো হলে বছরে সাশ্রয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।

সিটি ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৯ সালেও প্রতিষ্ঠানের পরিচালন মুনাফার পরিমাণ ছিল ৮৪০ কোটি টাকা। চলতি বছর সিটি ব্যাংকের মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ৫৫০ কোটি টাকা। ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ মাসে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক ২৩৫ টাকা মুনাফা করেছে। প্রথম প্রান্তিকে কর পরবর্তী মুনাফার পরিমাণ ৯১ কোটি টাকা। ব্যাংক যদি লোকসানে থাকতো তা হলে আমাদের বেতন কমিয়ে দেওয়া যুক্তিসংগত হতো।

Comment here