নিজস্ব প্রতিবেদক : কাঁচাবাজারে প্রায় সব ধরনের শীতের সবজির দেখা মিললেও দামে স্বস্তি মিলছে না। আগের সপ্তাহের মতো চলতি সপ্তাহেও তরিতরকারির দামে তেমন হেরফের নেই; চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে বেশিরভাগ সবজি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়লেও চাহিদার তুলনায় কম।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে- গতকাল শুক্রবার এ বাজারে প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। টমেটোর কেজি ১২০ টাকা। বেগুন ও করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, ঝিঙে ও মুলার কেজি ৪০ টাকা। একেকটি লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। শসার কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। কাঁচামরিচের কেজিও আগের মতো, ৬০ টাকা।
রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় সবজির দাম কারওয়ান বাজারের তুলনায় বেশি। শান্তিনগর ও মতিঝিল এজিবি কলোনি বাজারে দেখা গেছে, একেকটি ফুলকপির ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। মুলার কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
আশরাফ মিয়া নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, ‘ফুলকপি আকার বড় হইছে। আগে ছোট পিস ৫০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন একটু বড়, তাই ৬০ টাকা। একইভাবে লাউয়ের আকারও আজ কিছুটা বড় হওয়ায় দাম বাড়তি। তবে বাজারে ছোট লাউও পাওয়া যাচ্ছে। সেগুলো ৬০ টাকা।’
এ বাজারে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আবু বকরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সবজির যা দাম, তাতে মধ্যবিত্তেরও কিনে খেতে কষ্ট হচ্ছে। মাছ-মাংস আর ডিমের মতো তরিতরকারিটাও হিসাব করে করে কিনতে হচ্ছে। চাইলেও দৈনিক একের বেশি দুই পদের সবজির তরকারি খাওয়া যাচ্ছে না। এটা সত্যিই হতাশাজনক।’
শীতকালীন সবজিতেও বাজারে স্বস্তি না থাকার কারণ হিসেবে বৃষ্টিকে দুষলেন আরেক বিক্রেতা মো. শামসুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কৃষকের সবজির ক্ষেতের ক্ষতি হওয়ায় এখনও সরবরাহ পুরোপুরি বাড়েনি। তা না হলে এত দিনে ভরা মৌসুম শুরু হয়ে যেত। আমদানিও অনেক বেশি থাকত, দামও কম হতো।’
এদিকে কারওয়ান বাজারের সবজি সরবরাহকারী পাইকারি প্রতিষ্ঠান রিয়াদ এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী বলরাম চন্দ্রের দাবি, বাজারে কিছু সবজি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম আগের তুলনায় কমেছে। তিনি বলেন, গাজর, টমেটো, শসার মৌসুম পুরোদমে শুরু হয়নি। তাই এগুলোর দাম বাড়তি। তবে শিম, মুলা, বেগুন, করলা, বরবটি, পটোলসহ অনেক সবজির দাম পাইকারিতে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা কমেছে। সামনে শীত বাড়লে রাজধানীতে সবজির আমদানি আরও বাড়বে। বৃষ্টি আর ঘূর্ণিঝড় না হলে এর মধ্যেই আমদানি বেড়ে যেত। তা ছাড়া বর্তমানে সবজি উৎপাদনে কৃষকের খরচ ও সড়কে পরিবহন ভাড়া ও চাঁদাবাজি বেড়েছে। এতে এবার এমনিতেও অতীতের চেয়ে দাম বাড়তি থাকবে। তারপরও আমরা আশা করছি, শীত এলে আমদানি বাড়ার পাশাপাশি তুলনামূলক কম দামে তরিতরকারি কিনে খাওয়া যাবে।
Comment here